নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের হোস্টেল সুপার ও হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে আবাসিক হোস্টেলের ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তোলপাড় চলছে। গঠন করা হয়েছে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি।
জানা গেছে, চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠে আবাসিক হোস্টেলে চার শত ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। হোস্টেলে ভর্তির সময় প্রথমে তিনহাজার টাকা জমা দিতে হয়। প্রতি মাসের খাবার বাবদ জমা নেয় ৩ হাজার টাকা।
২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে হোস্টেল সুপারের দায়িত্ব নেন স্কুুলের শিক্ষক মৌলভী নেছারুল হক। এর আগে থেকে দায়িত্বে আছেন হিসাব রক্ষক পদে শহীদুল ইসলাম। নেছারুল হক যোগদানের পর শহীদুল ইসলামের যোগসাজসে শুরু হয় অনিয়মের যাত্রা। প্রতিমাসে ছাত্রদের খাবার বাবদ বাজার থেকে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন নেছারুল হক। নির্দিষ্ট কিছু দোকান থেকে বাজার করলে কমিশন বাবদ নিজের বাড়ির বাজারও করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি হিসাব রক্ষককে অনিয়মের সুযোগ দিয়ে প্রতিমাসের ৫ তারিখের মধ্যে ৫০ হাজার টাকা করে ১৬ দফায় ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন নেছারুল হক।
আরো জানা যায়, হিসাব রক্ষক শহিদুল ইসলাম ব্যাংকের ভূয়া জমা স্লিপ দেখিয়ে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাংকের জমা রশিদ ভূয়া বলে প্রমানিত হয়। এরপর থেকে শহীদুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। তবে এ টাকা আত্মসাতের ব্যাপারে ঘটনার সাথে জড়িত একেঅপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগও তুলছেন।
শহীদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হোস্টেল সুপার নেছারুল হক স্বাক্ষরের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা করে ১৬ দফায় ৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে হোস্টেল সুপার নেছারুল হক জানান, হিসাব রক্ষক শহীদুল ইসলাম মৌখিকভাবে প্রধান শিক্ষকের কাছে ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন। প্রধান শিক্ষকের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতিও দেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক নুরুল আখের বলেন, হোস্টেলের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সমুদয় টাকার হিসাব গুছিয়ে নিয়ে খুব শীঘ্রই তদন্ত কমিটির সদস্যরা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবেন। ওই প্রতিবেদনে কেউ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেলে তাদের কাছ থেকে ওই টাকা আদায়ের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানিক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত: